শত শত রুশ সৈন্যের আত্মসমর্পণে দাবি জেলেনস্কির

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর এপর্যন্ত ১৩শ ইউক্রেনীয় সৈন্য মারা গেছে। আর রুশ সৈন্যদের প্রাণহানি হয়েছে এর দশ গুণ বেশি। এছাড়া শত শত রুশ সৈন্য আত্মসমর্পণ করেছে।

গতকাল শনিবার (১২ মার্চ) রাজধানী কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। তবে তার এসব দাবি নিরপেক্ষ সূত্রে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের শহরতলীগুলোতে তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে। রুশ সৈন্যরা গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ইউক্রেনের সৈন্যরা পাল্টা গুলি চালাচ্ছে।

ইউক্রেন সেনা অধিনায়করা উদ্বিগ্ন যে রুশরা শহরটি ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে এবং যেকোনো মুহূর্তে ব্যাপক হামলা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। 

তবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলছেন, রুশ সৈন্যদের ক্ষতি হচ্ছে। গত কয়েক দশকের মধ্যে রাশিয়া এই মাত্রার সামরিক ক্ষতির মুখে আর পড়েনি। তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার ৩১টি সাঁজোয়া ব্যাটালিয়নের আর লড়াই করার ক্ষমতাই নেই।

ওদিকে অবরুদ্ধ বিভিন্ন শহর থেকে আটকে পড়া লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

ইউক্রেন জানিয়েছে, রুশ সৈন্যরা মারিওপোল শহরের পূর্ব দিকের দখল নিতে সক্ষম হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্বের এই শহরটি রাশিয়ার অন্যতম বড় একটি টার্গেট এবং শহরের বাসিন্দারা গত কয়েকদিনর ধরে তীব্র বোমা হামলার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। শহরে বিদ্যুৎ নেই। খাবার ও পানির সরবরাহ শেষ হয়ে আসছে।

অপরদিকে দক্ষিণে মেলিটোপোল শহরের দখল নেওয়ার পর রুশ সৈন্যরা শহরের মেয়রকে ধরে নিয়ে গেলে শত শত বাসিন্দা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে স্থানীয় প্রশাসনিক অফিসের বাইরে জড়ো হয়ে তারা ‘আমাদের মেয়রকে ফেরত দাও’ বলে শ্লোগান দিচ্ছে।

স্যাটেলাইটে তোলা ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে, রুশ রকেট লঞ্চারগুলো এখন কিয়েভের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর দিকে তাক করা। ভারী গোলাবর্ষণের শব্দও শোনা যাচ্ছে।

ইউক্রেনের একজন এমপি বিবিসিকে বলেছেন, রুশ আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য কিয়েভের মানুষ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও রুশরা শহরে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে।

কিয়েভের দক্ষিণে ইউক্রেনের একটি সামরিক বিমান ক্ষেত্রের ওপর রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। ভাসিলকিভ শহরের মেয়র জানিয়েছেন, এই হামলায় রানওয়ে ও তেলের ডিপো ধ্বংস হয়ে গেছে। একইসাথে পাশে অস্ত্র ও গোলাবারুদের গুদামেও বিস্ফোরণ ঘটেছে।

ইউক্রেনের আরেকটি উত্তরাঞ্চলীয় শহর চেরনিহিভ এখনো অবরুদ্ধ, সেখানে তীব্র গোলাবর্ষণ হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। শহরে পানি সরবরাহ নেই, একটি অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ হয়ে গেছে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মাইকোলেভ, যেটি রুশ অধিকৃত শহর খেরসান ও ইউক্রেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ওডেসার মাঝামাঝি, সেখানেও তীব্র গোলাবর্ষণ চলছে।

কিয়েভের কাছে এসে থমকে যাওয়া দীর্ঘ রুশ কনভয় এখন শহরটিকে ঘিরে ফেলছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ইউক্রেনের সরকার বলছে, আজ কয়েকটি মানবিক ত্রাণ করিডোর খোলা যাবে বলে তারা আশা করছে, যাতে বিভিন্ন শহরের রুশ বোমা হামলার মুখে থাকা লোকজন যেন পালাতে পারে। 

ইউক্রেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক জানিয়েছেন, এসব শহর থেকে মানুষকে উদ্ধারের বিষয়টি নির্ভর করবে রাশিয়া যুদ্ধবিরতি মেনে চলে কিনা, তার ওপর। -বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //